3 yrs - Translate

করোনার দিনগুলোতে নিকাব : স্বস্তি নাকি অস্বস্তি!

যদি প্রশ্ন করা হয়—এই সময়ে ব্যাপকভাবে মাস্ক পরা দেখে সবচে’ বেশি খুশি কারা? নিশ্চয় নিকাব পরুয়া নারীরা। মুখে না-বললেও মনে মনে নিশ্চয় বলেছেন, এইবার তো বুঝলেন নিকাবের কী মাজেজা। বিশেষ করে পশ্চিমা নওমুসলিম নারীরা—যারা এতদিন নিকাব পরার কারণে নানাভাবে নিগৃহীত হয়েছেন। ‘মুখোশ সুরক্ষা’ তাদের জন্য শাপে বর হয়ে এসেছে।

যারা ভাবছেন, ‘নিগ্রহ’ বলাটা একটু বেশি হয়ে গেছে, বরং ওসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা—তাদের উচিত আমেরিকার নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার ড. অ্যানা পিয়েলা’র (Anna Piela) প্রবন্ধটা পড়া। তিনি নিকাব পরিধানকারীদের ওপর লেখা তার আসন্ন বইয়ের জন্য ৩৮ জন মুসলিম নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সাক্ষাৎকারদাতারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ও বর্ণের। আছেন শ্বেতাঙ্গ, নিগ্রো, আরব, আফ্রিকান, এশিয়ান এবং তারা খ্রিষ্টান, ইহুদি বা নাস্তিক অবস্থা থেকে ইসলামে এসেছেন।

নারীরা তাকে বলেছেন, নিকাব পরার ফলে তারা কী কী আত্মিক সুবিধা পেয়েছেন, কিভাবে তা তাদেরকে গভীরভাবে ইসলাম অনুশীলনে সাহায্য করেছে। এবং একই কারণে রাস্তায় তারা কতটা ইসলামফোবিক, বর্ণবাদী ও যৌনতাবাদীদের হয়রানির শিকার হয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৮৫% নিকাবি নারী মৌখিক সহিংসতা এবং ২৫% শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। অভিযুক্তরা তাদেরকে নিপীড়িত, পশ্চাৎপদ, বিদেশী, সামাজচ্যুত বা হুমকি হিসেবে দেখেছে।

কিন্তু এখন সেই নিকাবই সবার ওপর ‘অপ্রত্যাশিতভাবে’ চড়াও হয়েছে। পশ্চিমারা রাস্তাঘাটে বা সুপারশপগুলোতে মুখোশ ছাড়া বের হওয়া অনিরাপদ ভাবছে। নিকাব এখন তাদের সুরক্ষা-বর্ম।

মার্কিন মুসলিমা আফ্রাহ বলেছেন : ঠিক একই সুরক্ষার জন্য এতদিন তিনি নিকাব পরেছেন—মানে নোংরা দৃষ্টি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে। এখন সবাই হঠাৎ ‘কারণ’টা মিলাতে পেরেছে। ফ্রান্সের জামিলা বলেছেন : ফ্রান্সের বেশিরভাগ সরকারি স্পটে নিকাব নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু তিনি আজ নিকাব পরে সেখানে গিয়েছেন, কেউ তাকে দোষী ভাবে নি। ক্রোয়েশিয়ান রুমানা বলেছেন : মুখ ঢাকার ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতা তাকে নিকাব ব্যবহারে অনীহা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।

এমনকি অমুসলিম নারীরাও এখন নিকাব পরতে চান। কেননা, মাস্ক পরে থাকাটা তাদের কাছে অস্বস্তিকর লাগে—তার চেয়ে নিকাব সুন্দর। আমেরিকার সাজিদা বলেছেন তার নওমুসলিমা বন্ধুর কথা, যার বাবা প্রচণ্ড ইসলাম বিরোধী—তিনিও এখন তার মেয়েকে ভাইরাস থেকে রক্ষায় নিকাব পরতে উৎসাহিত করেছেন।

মুসলিম নারীদের ভয় হলো, মহামারী চলে গেলে এই অবস্থা সত্যিই অব্যাহত থাকবে কি না। যদিও তারা আশা করছেন, যে বোনেরা আগে নিকাব বিরোধী ছিলেন এবং পরে প্রয়োজনের সময় গ্রহণ করেছেন, তারা যেন নিকাব থেকে ফিরে না আসেন।

নিকাবের কারণে মুখের অভিব্যক্তি বোঝা যায় না বলে যে অভিযোগ করা হয়, তার জবাবে তারা বলেন : মুখের আবরণ আসলে কার্যকর যোগাযোগে বাধা দেয় না। স্কটল্যান্ডের সোরায়া বলেছেন : নিকাব পরে আপনি হাসুন, চোখের চাহনি দেখলেই মুখের অভিব্যক্তি আপনি বুঝতে পারবেন। যদি আমি কোনও বাস স্টপে দাঁড়িয়ে বলি ‘হাই’, চোখ দেখলে তা-ও বুঝতে বেগ পেতে হবে না।

তথ্যসূত্র : https://bit.ly/3ejwy3n

Muslim women who cover their faces find greater acceptance among coronavirus masks – 'Nobody is giving me dirty looks'
bit.ly

Muslim women who cover their faces find greater acceptance among coronavirus masks – 'Nobody is giving me dirty looks'

As people everywhere don face masks, scarves and bandanas to protect against coronavirus, Muslim women who wear the niqab, or Islamic veil, are feeling a lot less conspicuous.