আপনার কী মনে হয়, করোনা ভাইরাস হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে যাবে?
কয়েকদিন ধরেই ভাবছি, বর্তমান বিশ্বের একটি আতঙ্কের নাম হচ্ছে করোনা ভাইরাস। এই করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ আসলে তেমন অচেনা নয়; এটা একটা বড় ভাইরাস দলের সদস্য, যার নাম করোনা। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।
এখন কথা হচ্ছে, এটি কি হঠাৎ করেই একটি দেশ থেকে নির্মূল হয়ে যাবে?
কয়েকটি আর্টিকেল ঘেঁটে যেটা বুঝলাম। ভাইরাস কখনো হঠাৎ করেই নির্মূল হয় না। এমনকি এই ভাইরাস যে হুট করেই জন্মেছে, এমনটাও নয়। এর আগেও এই ভাইরাস ছিল। এক দশক আগে ২০০৩ সালে যে ‘সার্স ভাইরাস’ (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) এর সংক্রমণে পৃথিবীতে ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেটিও ছিল এক ধরনের করোনা ভাইরাস। এতে আক্রান্ত হয়েছিল ৮ হাজারের বেশি লোক। এটির উৎপত্তিস্থলও চীনের দক্ষিণাঞ্চল গুয়াংডং-এ। এ কারণে চীন যখন প্রথম এই ভাইরাসের কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানায়, তখন এর নাম রাখে, SARS-CoV-2।
গবেষণা দেখা গেছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসটি বিগত ৪ মাসে প্রায় ৮ বার নিজেকে পাল্টেছে। এখন বুদ্ধি দিয়ে ভাবলে বুঝা যাবে, এই ভাইরাসটি দিন দিন খারাপ না হয়ে উল্টো ভালোও হয়ে উঠতে পারে এবং সেই সম্ভাবনার হারও বলা যেতে পারে ৫০ শতাংশ। কাজেই আতঙ্কিত হয়ে লাভ নেই। এটি হঠাৎ করেই নির্মূল হবে না, এই ভাইরাস থাকবেই, আমাদের ভেতরেই থাকবে, হয়ত ভাইরাস তার রূপ এবং গতিপ্রকৃতি পাল্টাতে পারে। যার ফলে সেটি আর মরণঘাতি থাকবে না। একটি সহিষ্ণু ফ্লুর মতো বেঁচে থাকবে আমাদের শরীরে।
এই কথা যদি সত্য হয়, তাহলে এটিও সত্য হতে পারে যে, আমাদের শরীরে বহমান সহিষ্ণু ভাইরাস কখনো কখনো তার রূপ এবং গতিপ্রকৃতি পাল্টে ফেলতে পারে। এবং সেটা মারণ ভাইরাসে রূপ নিতে পারে।
এর আগেও যত ভাইরাসের সাথে মানবশরীরের সাক্ষাত হয়েছে, সবগুলো কিন্তু একেবারেই নির্মূল হয়ে যায়নি। তাই ভ্যাকসিনের কাজটি হলো, সাময়িক মৃত্যুকে রোধ করা। যাতে মহামারীতে তরতর করে মানুষের মৃত্যু না ঘটে। এই ধরনের মৃত্যু আসলেই দুঃখজনক। এটি কখনো কাম্য নয়।
হাদিসে রোগ-মহামারীকেও রহমত বলা হয়েছে। তাই আমরা দোয়া করতে পারি, এই রোগ আমাদের জন্য সুস্থতার রহমতে পাল্টে যাক। এই ধরনের দোয়া আমাদের আকাবির আসলাফ যেমন দ্বারা প্রমাণিত, তেমনি এই রোগের পাল্টে যাওয়া চরিত্রটিও বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত। তাই বেশি বেশি প্রার্থনা করা করা, যেন ভাইরাসটি তার গতিপ্রকৃতি পাল্টে ফেলে এবং সেটি আমাদের জন্য আর মারণ ভাইরাসের আচরণ না করে।
তবে রোগের গতিপ্রকৃতি এবং চরিত্র পাল্টাতে মানব সমাজের জন্য যেটা করণীয়, তা হচ্ছে মানুষ তার পূর্বের জীবনধারা পাল্টে ফেলবে। হাদিসে বলা হয়েছে, যখন মানুষ প্রকাশ্য অনাচার ব্যাভিচার আর অশ্লীলতায় জর্জরিত থাকে, তখনই মহামারী নেমে আসে পৃথিবীতে। এতে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, এসব মহামারীর উৎস কোত্থেকে! তাই আমাদের উচিত সবার আগে এই উৎসপথ বন্ধ করা। এতেই হয়ত ভাইরাসটি তার মারণমুখী অন্যায় রূপটি পাল্টে ফেলতে পারে।
