তাবলীগ জামাত বর্তমান পরিস্থিতি ও উত্তরণের উপায়
-------মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব।

কিছু গলদ কথাঃ

১। 'তাবলিগের দুই গ্রুপ'
এটা ভুল কথা। সহি তাবলীগের কোন গ্রুপ নেই। ভিন্ন গ্রুপের নামে যারা আত্মপ্রকাশ করেছে তারা ভ্রান্ত।

২। 'ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি'
এটাও গলদ কথা। বরং বলতে হবে হক বাতিলের দ্বন্দ্ব।

৩। 'আল্লাহ দুই গ্রুপের মাঝে মিল করে দিন' এটা সঠিক দুআ নয়। বরং বলতে হবে আল্লাহ হক বাতিলের পার্থক্য করে দিন এবং হককে বিজয়ী করুন!

৪। 'আমরা কোন দলে নেই'
এটাও প্রতারণামূলক কথা। বলতে হবে আমার হকের পক্ষে আছি থাকব।

৫। 'আমাদের সাথেও আলেম আছে'
এটা তো চরম বেআদবীমূলক কথা।
আলেমরা তোমাদের সাথে থাকবে
কেন ? তোমরা আলেমদের অনুসরণ করবে। যে সকল দরবারী আলেম ভ্রান্ত সাদিয়ানীদের সাথে আছে বা সমর্থনকরে অথবা মৌন সমর্থন দেয় তারা পকেটস্থ আলেম বিক্রি হওয়া আলেম!

৬। 'মেহনতটা নষ্ট হয়ে গেল'
মেহনত নষ্ট হয়নি। বরং মেহনতের মধ্যে গোমরাহী ঢুকে কলঙ্কিত হয়েছে। তাই মেহনতকে পবিত্র করার কাজ চলছে।

৭। 'আলেমরা এখানে নাক গলায় কেন তারা তো তাবলিগের সাথি না' এটা মূর্খতাপূর্ণ কথা। দ্বীনের সকল
বিষয়ের জিম্মাদার উলামায়ে কেরাম।
তাবলিগ ব্যক্তি বা দলীয় মেহনত নয়।
তাবলিগ তো সকল মুসলমানের
জিম্মাদারী। আর এই পদ্ধতি ছাড়া দ্বীন প্রচার করলে তাবলীগ হবে না ?

৮। 'আওয়াম ছাড়া উলামারা চলতে
পারবে না' এটা উল্টা কথা। বরং বলেন, উলামা ছাড়া আওয়ামরা দ্বীনের উপর চলতে পারবে না।

৯। 'চিল্লা বা সাল না লাগালে ইমান ও
ইলম পাকা হয়না' বরং ইলম না থাকলে চিল্লা সাল ইমান কিছুই পাকা হয় না।

১০। 'আলেমরা মাওলানা সাদের ব্যাপারে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে' নাউজুবিল্লাহ! যেই দেশে আলেমরা দ্বীন সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দিবে সেদেশে দ্বীনের সঠিক ব্যাখ্যা কারা
দিবে ? স্যার ? ডাক্তার ? ব্যবসায়ী ? এরাতো নিজেরাই দ্বীন জানে না। এরা আবার কীসের দ্বীনের ব্যাখ্যা দিবে ?তাবলীগ জামাত বর্তমান পরিস্থিতি ও উত্তরণের উপায়
-------মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব।

মায়ের সাথে ঝগড়া,মনমালিন্যে।অভিমানে বললাম " এতো অভাব আর ভালোলাগেনা।যদি ধনী ঘরে জন্ম পেতাম!শান্তি আর শান্তি "

আমার কথায় মা মুখ ভেংচি দিয়ে বলে " তো এখন বড়লোক বাবা খুজে নে।বড়লোক একজনকে দেখে বলবি আমাক ছেলে বানিয়ে নেন "

" ধুর,সেটা হয় নাকি! "

বাবা মায়ের সাথে অভিমানে এসব কথা প্রায়শই বলতাম।মন থেকে বলতাম না,ওনারাও জানেন আমি মজার ছলে বলি।

কিন্তু বাবা এরুপ কথায় মন খারাপ করতেন।মনম"রা হয়ে শুয়ে থাকতেন।তখন আমার খুব রাগ লাগতো।মাকে গিয়ে বলতাম

" মজা করে বললাম,বাবা সেটাকে ধরে মন খারাপ করে আছে।বাবা মজা বুঝেনা কেন? "

" ক্লান্ত হয়ে ফেরে তো,মেজাজ খিটখিটে থাকে।তোর বাবার সামনে ওসব বলবি না "

" এমন রোবটিক্স বাবা পাইছি! একটু মজাও বুঝে না।ধুর! "

সময় চক্রে আমিও আজ বাবা।ছেলের বয়স ১৩।স্কুলে যাওয়ার জন্য সাইকেলের বায়না ধরলো।বললাম

" দুইটা মাস পর নিয়ে দিবো বাবা,এখন একটু টাকার টান চলছে "

" আমার সব বন্ধুরা সাইকেলে আসে।আমাকে কালকেই কিনে দাও"

" হঠাৎ করে এতো টাকা কই পাবো?আচ্ছা, বাবাকে আর এক মাস সময় দাও।একমাসের মধ্যেই কিনে দিবো "

ছেলে মনখারাপ করে বললো " রাহাত যা চায় ওর বাবা সঙ্গে সঙ্গে তাই কিনে দেয়।রাহাতের বাবা যদি আমার বাবা হতো! কি যে ভালো হতো! "

কথাটা বলে ছেলে চলে গেলো।বু!কের ভেতরটা হাহাকার করে উঠলো।মনে পড়লো অল্পবয়সে বাবা মায়ের সাথে অভিমানে বলা কথা গুলো।বাবা আমার কথায় মন খারাপ করলে মাকে বলেছিলাম " বাবা মজা বুঝে না "।

বাবারা সত্যিই মজা বোঝে না,যেমনটা আমি বুঝলাম না।।বাবা দেখে সন্তানের প্রতি নিজেদের অপারগতা,বাবা হিসেবে নিজের কমতি।ছেলের কথায় দুই রাত আমার ঘুম হলো না।বার কয়েক কান্নাও পেলো।অবাক হয়ে ভাবতে লাগলাম,সামান্য একটা দীর্ঘশ্বাস কত ভয়ঙ্কর!

এখন বুঝি,বাবা কেনো মজা বুঝতেন না।ছেলে মেয়ে যখন অভিমান বা মজার ছলে এসব বলে,বাবাদের বু!কে র!ক্তক্ষরণ শুরু হয়।অল্প বয়সে সন্তানরা সেটা বুঝে না।বোঝে নিজেরা বাবা মায়ের পর্যায়ে গেলে তবে।

গল্প #অনুশোচনা
লেখক #জয়ন্ত_কুমার_জয়